টুকুনগল্প

তো?

পৃথিবীর সব কিছুই স্বল্প বা দীর্ঘদৈর্ঘ্যে মিথ্যার নবায়ন। এই লাইনটা পাই আমার পুরানো ডায়েরিতে। এই এন্ট্রির ওপর সন তারিখ আছে। সেই হিসেবে আমার বয়স এখন গুণে দেখলাম দুইশত বছরের ওপরে। আচ্ছা, উন্মাদ হলে কি দিন তারিখ গুলিয়ে আসে? নাকি সন লিখতে গিয়ে সেইদিন কোনো কারণে ভুল করেছিলাম। ঠিক মনে নেই। আমি ইদানিং সুস্থ। সুস্থতা মাপার সুনির্দিষ্ট কোনো নিয়ম আছে কিনা জানি না। তবে মানসিক হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছি প্রায় এক বছর। মানুষ কেন উন্মাদ হয় বা আমি কেন উন্মাদ হয়েছিলাম, সেটার গল্প বলতে ইচ্ছে হচ্ছে না। যদি বলি মানসিকভাবে সুস্থ থাকার একঘেঁয়েমি থেকে বাঁচতে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। কি? বিশ্বাস করবেন?

হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবার পরে বন্ধুবান্ধব- আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে একটা পরিবর্তন দেখতে পাই। পিচ্চিদের চেহারায় আমার সুস্থতা তখনো প্রশ্নসূচক, বড়োরা অভিনয় করার চেষ্টা করে স্বাভাবিক আচরণের। আমি আমার শহর থেকে পালিয়ে অন্য এক শহরে চলে আসি। একটা ডিসপেনসারিতে চাকরি নেই। মেসের একটা ছোট্ট ঘরে থাকা শুরু করি। শীতকাল শুরু হলে বেড়ার ফাঁক দিয়ে ঠান্ডা ঠেকাতে ম্যাগাজিনের নায়িকাদের আঠা দিয়ে লাগাই। রাতে এতো এতো নায়িকাদের চোখ, মুখ, স্তন আমাকে একযোগে আক্রমণ করে। আর আমি ঘুমিয়ে পড়ি।

মাঝে মাঝে অকারণে রাত করে বাড়ি ফিরি। বাড়িতে ফেরার পরেও বাড়ি ফেরার অদম্য ইচ্ছাটা একদম অক্ষত থাকে।